December 23, 2024, 2:04 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরে ভারত থেকে আনা ৪৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার, আটক ৫ চুয়াডাঙ্গায় জামায়াত আমির/কোনো বিভক্তি নয়, ঐক্যই হোক এ জাতির সৌন্দর্য ও সমৃদ্ধি আ.লীগকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না: হানিফের বিৃবতি পদ্মায় পানি বৃদ্ধি, পানিবন্দি ৪০ গ্রাম, নিম্নাঞ্চলে মৌসুমী ডাল ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা ১২০০ টাকা কেজি দরে প্রথম চালানে ভারতে গেল ১২ টন ইলিশ, ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির জন্য ২ সদস্যর আহ্বায়ক কমিটি, বিলুপ্ত মিরপুর উপজেলা কমিটি/ যা বললেন জাকির সরকার জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের রোহিঙ্গা সংকট অবহিত করলেন ড. ইউনূস, সমাধানে ৩ প্রস্তাব ইবিতে নব নিযুক্ত উপাচার্য/ শিক্ষার্থীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলাই তার স্বপ্ন আট ঘন্টার ব্যবধানে মাগুরা ও ঝিনাইদহে সড়কে নিহত ৫ নিউইয়র্কে তৌহিদ-জয়শঙ্কর বৈঠক/বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতি

যেসব কারণে কুষ্টিয়া মেডিকেলের নির্মাণ এগোয় না

দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/

২০০৮ সালের ডিপিপি দিয়ে ২০১৩ সালে কাজ শুরু, দুই প্রকৌশলীর দায়িত্বহীনতা, ছোট ছোট প্যাকেজে কাজ ভাগ করা, ছাদ ধসে পড়া ও অনিয়মে কাজ বন্ধ থাকা এবং প্রকল্প পরিচালকের অদক্ষতার কারণে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের কাজ ঠিকমতো এগোয়নি। যে কাজ ২০১৬ সালে শেষ হওয়ার কথা ২০২১ সালে এসে তার অর্ধেকমাত্র হয়েছে। এরমধ্যে দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের ব্যয়। শেষমেষ এর লাগাম ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সময় ও ব্যয়বৃদ্ধির সংশোধনী প্রস্তাব আটকে দিয়েছেন। তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পৃথকভাবে তদন্তে নেমেছে। কুষ্টিয়া এসে অতি সংগোপনে তারা তদন্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম। তিনিও এর বেশি জানতে পারেন নি।
গণপূর্তের যশোর সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মানিক লাল দাস। তিনি কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ প্রকল্পের সুপারভাইজার অফিসার। তিনি বলেন, ২০১২ সালের প্রকল্প, আর আমি আছি মাত্র দুই বছর। আমার সময়ে প্রকল্প রিভিশন হয়নি, সময় বা অর্থ বৃদ্ধি পায়নি। কেন বারবার রিভিশন দরকার হচ্ছে সময় ও অর্থ বাড়াচ্ছে? জানতে চাইলে মানিক লাল দাস বলেন, এব্যাপারে কুষ্টিয়ার স্থানীয় প্রকৌশলীরা ভাল বলতে পারবেন। মানিক লাল দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো- দীর্ঘদিন ধরে এ কাজের সাথে থাকলেও সাইট পরিদর্শনে আসেন না ঠিকমত। এর আগে অবহেলায় যে ছাদ ধস হয় তাতে অন্যরা শাস্তি পেলেও বিশেষ ব্যবস্থায় তিনি পার পেয়ে যান। মেডিকেলের ঠিকাদারদের কাছ থেকে সুবিধা নেয়ার মত অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া অন্য ঠিকাদারদের যেখানে কাজের মেয়াদ শেষ সেখানে একজন ঠিকাদার জহুরুল ইসলামের মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছেন ২০২২ সাল পর্যন্ত। ঠিকাদার জহুরুলের প্যাকেজের কাজেই ২০১৯ সালের ১৭ই জানুয়ারি হাসপাতাল ভবনের গাড়ি বারান্দার ছাদ ধসে পড়ে। এরপর প্রকল্পের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মের অভিযোগে গণপুর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী, এসডি, এসও সহ ৪ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়। দুইজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনাও কাজে ধীর গতি আনে। পরে ঠিকাদার জহুরুলকে কালো তালিকাভুক্ত করা হলেও তিনি পার পেয়ে যান আদালতে রিট করে। তবে, নিজে কোন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নন বলে জানান মানিক লাল দাস। বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। মানিক লাল বলেন, প্রকল্পের বাজেট-পরিকল্পনা পাশ করা এবং টেন্ডার করার দায়িত্ব আমার। তিনি বলেন সব ডিপিপি হেড অফিস থেকে করা হয়েছে। এর আগে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) দুই বার দেখেছে, তারা বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন। তবে তিনি স্বীকার করেন, এই প্রকল্পের শুরু থেকেই সমস্যা আছে। বলেন, ২০০৮ এর সিডিউল মোতাবেক প্রকল্প পাশ হয় ২০১২ সালে। এরমধ্যে ২০১৩ সালে সিডিউল পরিবর্তন হয়েছে। তখন টেন্ডার করা যাচ্ছিল না কারণ, সিডিউল পরিবর্তন করায় উপকরণের মূল্য বেড়ে যায়। ২০১৪ তে আবার সিডিউল পরিবর্তন হয়। দুই দফায় ব্যয় বেড়ে যায়। মানিক লাল বলেন, এসব ঘটনায় কোন কর্মকর্তা এককভাবে দায়ী নয়। প্রকল্পের রিভিশন পাশ হয়েছে ২০১৮ সালে। তিনি মনে করেন এই রিভিশন প্রথমেই অর্থাৎ ২০১২ সালেই পাশ করে দেয়া উচিৎ ছিলো। তখনকার যেসব কর্মকর্তা বিশেষ করে কুষ্টিয়া গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন তার গাফিলতির কারনেই প্রকল্প এতো সংকটে পড়েছে।
২০১৩ সালে কাজ শুরুর পর ডিপিপির দর নিয়ে ফাইল চালাচালিতে সময় চলে যায়। কাজের শুরুতেই সব উপকরণের বাজার দর বেড়ে যায়। তাই নকশা অনুয়ায়ী প্রতিটি ভবন শেষ না হতেই বরাদ্দকৃত অর্থ ফুরিয়ে যায়। বাজেটের মধ্যে কাজ পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। ৬তলা ভবনের জন্য যে বাজেট দেয়া হয়েছিল তা দিয়ে নির্মাণ করা হয় ৪তলা ভবন। মূলত: ২০০৮ সালের রেট দিয়ে ২০১৩ সালে কাজ শুরু করায় এ সমস্যা দেখা দেয়। তবে বিষয়টি গোপন রাখে তখনকার কয়েকজন প্রকৌশলী। আইএমইডির নজরে আনার কথা থাকলেও তা না করে কাজ চালিয়ে যায় ঠিকাদার ও প্রকৌশলীরা। কাজের মূল্যায়ণ করতে পরিদর্শনে এসে আইএমইডির টিমের সদস্যরা এ কারণে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এনে প্রতিবেদন দেন। এরপর দুই বছর তদন্তে কেটে যায়। অর্থ ছাড়ও বন্ধ হয়ে যায়। তখন এ প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন ডা. ইফতেখার মাহমুদ। তিনি একই সঙ্গে অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি প্রকল্প পরিচালনায় দক্ষ না হওয়ায় গণপুর্ত বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা দেখা দেয়। ২০১২ সালে যখন টেন্ডার আহবান করা হয় তখন কুষ্টিয়া গণপূর্তে নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন শাহিন মিয়া। গণপূর্ত অফিস তেকে জানা যায়, তিনি সেসময় এক সাথে ৬টি ভবনের টেন্ডার করেন। টেন্ডার শেষে কাজ শুরুর আগেই অগ্রিম বিল দিয়ে দেন ঠিকাদারদের। বিল পেয়ে কাজ শুরু করতে গড়িমসি করেন ঠিকাদাররা। শাহিন মিয়ার পর নির্বাহী প্রকোশলী হিসেবে যোগ দেন মোহাম্মদ শহিদ কবির। তার বিরুদ্ধেও দায়িত্বহীনতার অভিযোগ রয়েছে। এই দুই প্রকৌশলী ডিপিপি ক্রয় পরিকল্পনায় ব্যাত্যয় ঘটিয়ে লিমিটেড (এলটিএম) টেন্ডার করেন। ক্রয় পরিকল্পনায় ছিল প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহবান বা ওপেন (ওটিম) টেন্ডার। এলটিএম টেন্ডার করায় সরকারের খরচ বৃদ্ধি পায়। আর ছোট ছোট প্যাকেজ করার কারণে দেশের নামীদামি ঠিকাদাররা এ কাজে আগ্রহ দেখান না। একারণে যেসব ঠিকাদার কাজ করছেন তাদের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ঠিকাদাররা। সেসময়ে নির্বাহী প্রকৌশলী শাহিন মিয়া বলেন, তারা যথাযথ প্রক্রিয় মেনেই টেন্ডার করেছিলেন। কোন অনিয়ম হয়েছে বলে আমার জানা নেই। শাহিন মিয়া পদোন্নতি পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন।
২০১৮ সালে নতুন করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি অর্থ ছাড় করা হয়। ২০১৯ সালে নতুন করে দায়িত্ব দেয়া হয় তরুন প্রকৌশলী আরিফুল ইসলামকে। সৎ কর্মকর্তা হিসেবে এ জেলায় তাকে পদায়ন করা হয়। এ কর্মকর্তা যোগ দেয়ার পর দ্রুত কাজ শেষ করার পদক্ষেপ নেন। একই সাথে প্রতিটি কাজের মান যাচাই করে বিল দেয়ার মত পদক্ষেপ নিয়েছেন। তার সময় পুরো চত্বরের বালি ভরাট কাজ, প্রচীর নির্মাণ, একাডেমিক ভবন, ছাত্র-ছাত্রী হোস্টেল, চিসিৎসক ও নার্স ডরমেটরি, ও মূল হাসপাতাল ভবনের কাজও প্রায় শেষ।
গত ৭ জানুয়ারি লাহিনী এলাকায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাসে গিয়ে কাজ চলমান অবস্থায় দেখা যায়। তবে, এতো বড় প্রকল্পে যে পরিমাণ শ্রমিক কাজ করার কথা তা দেখা যায়নি। ৬টি প্যাকেজে ২০/২৫ জন করে কাজ করতে দেখা যায়।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ভবনের পিডি ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন,‘ নতুন করে জমি অধিগ্রহণ ও আরো কিছু ভবন নির্মানের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। আর আগের যেসব কাজ চলমান তা শেষের পথে। নতুন বছরেই নতুন ক্যাম্পাসে ছোট ছোট করে হলেও সব কার্যক্রম শুরু হবে বলে আমরা আশা করেন তিনি।

৫০জন শিক্ষার্থী নিয়ে ২০১১ সালে কুষ্টিয়া শহরে মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট টেনিং ইনস্টিটিউট (ম্যাটস) ভবনে অস্থায়ীভাবে যাত্রা শুরু হয় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের।

কুষ্টিয়ায় মেডিকেল কলেজ/বাস্তবায়নের ধীরগতিতে ক্ষব্ধু প্রধানমন্ত্রী, তদন্তের নির্দেশ

নিউজটি শেয়ার করুন..


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

MonTueWedThuFriSatSun
      1
30      
1234567
891011121314
15161718192021
293031    
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
   1234
26272829   
       
293031    
       
    123
25262728293031
       
  12345
27282930   
       
      1
9101112131415
3031     
    123
45678910
11121314151617
252627282930 
       
 123456
78910111213
28293031   
       
     12
3456789
24252627282930
31      
   1234
567891011
19202122232425
2627282930  
       
293031    
       
  12345
6789101112
       
  12345
2728     
       
      1
3031     
   1234
19202122232425
       
293031    
       
    123
45678910
       
  12345
27282930   
       
14151617181920
28      
       
       
       
    123
       
     12
31      
      1
2345678
16171819202122
23242526272829
3031     
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829 
       
© All rights reserved © 2021 dainikkushtia.net
Design & Developed BY Anamul Rasel